শেষ কি সত্যিই শেষ?
Writer: Md. Earshad Ali Mondol
একদিন জীবনের কলরব ঠেলে
নীরবতার নদীতে ডুবেছিলাম—
ভাবলাম, শব্দের মৃত্যুই শান্তি।
কিন্তু নীরবতাও একদিন
হয়ে উঠলো মরুভূমি,
যেখানে নিজের প্রতিধ্বনি ছাড়া কিছুই ছিলো না।
তারপর কোলাহলের দিকে ফিরলাম—
যেন ভাঙা আয়নায় নিজের মুখ খুঁজে ফিরি,
প্রতিটি হাসি, প্রতিটি আহাজারি
ছিলো অস্তিত্বের আরেক প্রমাণ।
আমরা ছিলাম দুই দিকচিহ্নহীন যাত্রী—
স্বপ্নের মানচিত্র হাতে,
যেখানে প্রতিটি দাগ ছিলো অনন্তের প্রতিশ্রুতি।
সাগরের পর সাগর হেটেছি
পূর্ণিমার ফেনায় আত্মা ধুয়ে নেব বলে,
রাতের পর রাত জেগেছি
ভোরের জন্মদৃশ্য দেখব বলে।
কত প্রান্তর পেরিয়েছি—
যেখানে ঘাসের ফাঁকে সময় থমকে থাকতো,
আমরা ভাবতাম, চলা মানেই পৌঁছানো।
কি শিশুসুলভ বিশ্বাস!
আমরা ভেবেছিলাম স্বপ্ন মানেই ভবিষ্যৎ,
অপেক্ষা মানেই অর্জন।
তবু জীবন চলছিলো—
অমরালয়ের সিঁড়িতে ওঠা কোনো পাগল সন্ন্যাসীর মতো।
কোনো সংশয় থামাতে পারেনি আমাদের যাত্রা,
যতক্ষণ না তুমি ছেড়ে দিলে হাত—
যেন হঠাৎ সূর্য হারালো দিগন্তে।
তুমি বললে, “আমি আর জাগিব না রাত।”
সেই বাক্যে সব তারাগুলো নিভে গেলো,
আমার পৃথিবী হয়ে গেলো এক শূন্য কক্ষ,
যেখানে সময়ও ঘুমাতে ভয় পায়।
এখন প্রতিদিন মনে হয়—
জীবন যেন এক অসমাপ্ত ছায়াপ্রদীপ,
যেখানে আলো আর অন্ধকার
চক্রাকারে একে অন্যকে জন্ম দেয়।
তবু প্রশ্ন জাগে—
একজীবনে কি সত্যিই সব শেষ হয়?
নাকি ভালোবাসা, হারানো, নীরবতা
সবই এক মহাজাগতিক চক্র—
যেখানে প্রতিটি বিদায়ই আরেক জন্মের আহ্বান?