Skip to Content

একটি গর্ভের মৃত্যুদণ্ড

Writer :NRM Fuad
November 26, 2025 by
একটি গর্ভের মৃত্যুদণ্ড
MUKTO AL MAMUN
| 1 Comment

একটি গর্ভের মৃত্যুদণ্ড: যশোর, ২৫ শে মে ২০২৪। 


 যশোর, মে মাসের ২৫ তারিখ, ২০২৪ সাল। সেদিন নীরবতার মধ্যে এমন এক দৃশ্যের জন্ম হলো, যা আমাদের কথিত সভ্যতার সমস্ত ভণ্ডামি ফাঁস করে দেয়।


"হাঁস-মুরগির বাচ্চা খেয়েছে।" – এই অপরাধে হত্যা করা হয় একটা মা বিড়াল কে । আমাদের সমাজ এমন যে একজান মানুষ হত্যার পরে ঠিকই বিচার কার্য হয়, শত কথা হয়। কিন্তু প্রানির বেলায় হয় না। তবে উভয়ই কিন্তু প্রানি।

 সামান্য খাদ্যচক্রের প্রাকৃতিক দাবি মেটানোই ছিল তার মৃত্যুদণ্ডের কারণ। সে ছিল একটি সাদা, সামান্য বিড়াল। কিন্তু তার শরীর কেবল তার একার ছিল না—তার ভেতরে ছিল আরও কয়েকটি ছোট্ট প্রাণের স্পন্দন, যাদের জীবন শুরুর আগেই শেষ করে দেওয়ার চূড়ান্ত নির্মম সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

তাকে লাঠিপেটা করা হলো। আঘাতের পর আঘাত—সেই আঘাতে কেবল তার মাংসল শরীরটাই কাঁপেনি, কেঁপে উঠেছিল মানবিকতার শেষ আশ্রয়টুকু। সে হয়তো জানত না কেন এই শাস্তি, কেন এই নিষ্ঠুরতা। তার নীরব, যন্ত্রণাকাতর চোখ হয়তো তাকিয়েছিল তার মৃত্যুদাতা মানুষের দিকে।

হত্যা শেষে তারা শান্ত হয়নি। নৃশংসতার শেষ প্রদর্শনী বাকি ছিল। তাকে গলায় চেইন পরানো হলো। হ্যাঁ, চেইন, যেন সে কোনো ভয়ঙ্কর অপরাধী। এরপর তাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো—একটি ডাল থেকে, মাঝ-আকাশে, সবার চোখের সামনে।

তার মোটা পেটটি ঝুলে ছিল—প্রমাণ হিসেবে, সাক্ষ্য হিসেবে। যে জীবন পৃথিবীতে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, সেই জীবনকে উল্টো করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো। এই দৃশ্য যারা তৈরি করেছিল, তাদের কি এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি, তারা কিসের সমাপ্তি টানছে?

যদি একটি গর্ভবতী প্রাণীর উপর এতটুকু মমতা বা দয়া না থাকে, তবে আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড কি কেবলই হিংসা দিয়ে তৈরি নয়।

আপনিও কি বলবেন, "ও তো শুধু একটা বিড়াল"?


এটি কেবল একটা বিড়াল ছিল না। এটি ছিল মানবিকতার শেষ পরীক্ষা, এবং আমরা সেই পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে ফেল করেছি। এটি প্রমাণ করে যে, পোশাক, শিক্ষা আর আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের বর্বর মনস্তত্ত্বকে ঢেকে রাখতে

 পারেনি।

Sign in to leave a comment